উল্কা গেমসের কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরবাজেটের আকার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবে
No icon

নতুন ভ্যাট আইন স্টিল শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে

আগামী ১ জুলাই নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হলে প্রতি টন রডের দাম ৯ হাজার টাকা বাড়বে। শুধু তাই নয়, গ্যাস কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব অনুযায়ী গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে প্রতি টন স্টিল উৎপাদন খরচ চার হাজার টাকা বেড়ে যাবে। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্টিল উৎপাদন খাতের তিনটি সংগঠনের নেতা বলেন, বর্তমানে প্রতি টন রডে ৯০০ টাকা ভ্যাট দিতে হয়। অথচ নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হলে প্রতি টন রডে অনেক বেশি ভ্যাট দিতে হবে। এতে রডের দাম বেড়ে যাবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবে রি-রোলিং মিল অ্যাসোসিয়েশন, স্টিল ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং স্টিল মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সময় স্টিল ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোয়ার হোসেন, রি-রোলিং মিল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাহবুবুর রশিদ জুয়েল, স্টিল মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান বকুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্টিল ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শহীদুল্লাহ বলেন, বর্তমানে স্টিল পণ্য ও রড উৎপাদন এবং সরবরাহ পর্যায়ে ট্যারিফ প্রথা বিদ্যমান আছে। এ পদ্ধতিতে সহজেই ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দিয়ে আসছে। তাছাড়া এ নিয়ে ভ্যাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো মতবিরোধ বা মামলার নজির নেই। আগামী বাজেটে ট্যারিফ প্রথা বাতিল করলে প্রতি টন রডের দাম ৯ হাজার টাকা বাড়তে পারে। এতে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই প্রতি টন রডের ভ্যাট ৯০০ টাকা বহাল রাখার দাবি জানান তিনি।

শহীদুল্লাহ আরও বলেন, স্টিল উৎপাদনে গ্যাস-বিদ্যুৎ দুটোই ব্যবহৃত হয়। স্টিল শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার সাত টাকা ৭৬ পয়সা থেকে ১৮ টাকা চার পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ক্যাপটিভ পাওয়ারের ক্ষেত্রে ৯ টাকা ৬২ পয়সা থেকে ১৮ টাকা ৮৮ পয়সা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব অস্বাভাবিক ও মাত্রাতিরিক্ত। প্রস্তাব অনুযায়ী গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে ক্যাপটিভ পাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পাবে।

শুল্কমুক্ত সুবিধায় রড আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়ে শহীদুল্লাহ বলেন, গুণগত মানের বিচারে বাংলাদেশে উৎপাদিত রড বিশ্বমানের। বর্তমানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা সেতুর মতো বড় এবং জটিল স্থাপনা বাংলাদেশের রড দিয়ে তৈরি করা হলেও রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট, কাঁচপুর-মেঘনা-গোমতী সেতু, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণে বিদেশি রড ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো বিনা শুল্কে আমদানি করা হচ্ছে। এতে সরকার একদিকে রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে দেশীয় স্টিল শিল্প প্রতিষ্ঠান বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। এটি দুঃখজনক, অপমানজনক ও হতাশাজনক।

সংবাদ সম্মেলনে একইসঙ্গে স্টিল শিল্পের কাঁচামাল ফেরাস ওয়েস্ট অ্যান্ড স্ক্র্যাপ এবং স্পঞ্জ আয়রন আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বহাল এবং আমদানি শুল্ক ১৫০০ টাকা বহাল রাখার দাবি জানানো হয়। রড সরবরাহের ওপর উৎসে কর সাত শতাংশ প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়।