উল্কা গেমসের কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরবাজেটের আকার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবে
No icon

ভ্যাট থেকেই বেশি রাজস্ব

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের ধরন হবে মূল্যসংযোজন কর (ভ্যাট) নির্ভর। একক খাত হিসেবে ভ্যাট থেকেই সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। এরপরই থাকবে আয়কর খাতের অবস্থান। প্রস্তাবিত বাজেট কাঠামোর ওপর তৈরি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আগামী বাজেটে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করা হবে। ফলে ভ্যাটের আওতা বাড়বে। একই সঙ্গে এর হারও হবে ভিন্ন ভিন্ন। এছাড়া ভ্যাট ফাঁকি রোধে অনলাইনে ভ্যাট আদায়ের অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। এসব কারণে আগামী বাজেটে রাজস্ব আদায়ে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে ভ্যাটের ওপর।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের বাজেটেও রাজস্ব আদায়ে ভ্যাট খাতকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে মোট রাজস্বের ৩৭ দশমিক ৩ শতাংশ ভ্যাট থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এনবিআর খাতে এবার মোট রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে আদায় হয়েছে ৪৭ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম। যে কারণে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে রাজস্ব আদায়ের মতো ভ্যাটের ক্ষেত্রেও লক্ষ্যমাত্রায় সংশোধনী আনা হবে। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯১ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আদায় না হওয়ায় সংশোধন করে ৬৮ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। ওই বছরেও ভ্যাট থেকেই বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এর মধ্যে মোট রাজস্বের ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভ্যাট থেকে এবং আয়কর খাত থেকে ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় এর পরিমাণ কমে ৬৮ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ওই বছরে মোট রাজস্বের মধ্যে ভ্যাট থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং আয়কর থেকে ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ৫৩ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা করা হয়। এ অর্থবছরে মোট রাজস্বের মধ্যে আয়কর থেকে সবচেয়ে বেশি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এ হার ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ। ভ্যাট থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। এ হার ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫ হাজার ১৩ কোটি টাকা। ওই বছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ৪৯ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা করা হয়। এ অর্থবছরে ভ্যাট থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এ হার ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ। আয়কর থেকে ছিল ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত কয়েক বছর ধরে রাজস্ব আদায়ে ভ্যাট ও আয়কর শীর্ষে থাকছে। গত তিন অর্থবছর ধরে ভ্যাটই থাকছে শীর্ষে। তবে এবার নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার কারণে ভ্যাট আদায় বাড়বে বলে আশা করছে এনবিআর।