ইআরডি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী বাড়ছে দেশি-বিদেশি ঋণের ঝুঁকিজুন নাগাদ আয়কর রিটার্ন ৪৫ লাখে উন্নীত হবেউল্কা গেমসের কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরবাজেটের আকার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেই
No icon

করছাড় কমানোর পরামর্শ আইএমএফ মিশনের

বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত অনেক কম। টেকসই উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আয় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। আর এ জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে করছাড় কমানোর পরামর্শ দিয়েছে ঢাকায় সফররত আইএমএফের প্রতিনিধি দল। এ ছাড়া রাজস্ব খাতে কিছু সংস্কারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা।অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে গতকালও আইএমএফ প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সুদহারে আরোপিত সীমা প্রত্যাহারে সংস্থাটির পরামর্শের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, একবারে সীমা না তুলে কিছুটা বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে। ঋণের সুদহারে বিদ্যমান সীমা ৯ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ হতে পারে বলে জানা গেছে।বৈদেশিক মুদ্রার বর্তমান সংকট উত্তোরণে আইএমএফের কাছে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে সরকার। এর পর সংস্থাটির একটি প্রতিনিধি দল দুই সপ্তাহের সফরে ঢাকায় এসেছে। গত ২৬ অক্টোবর থেকে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করছে।

জানা গেছে, গতকাল এনবিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করছাড় একবারে তুলে নিলে শিল্প খাতের সুরক্ষার মাধ্যমে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে ধাপে ধাপে কর ছাড় কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। কর আহরণ বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ চলমান আছে। বিশেষ করে করের আওতা বাড়ানো হচ্ছে। এ ছাড়া আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে।জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বৈঠক করে আইএমএফ। সেখানে তেলের দর বৃদ্ধির প্রভাব, মূল্যস্ম্ফীতির প্রক্ষেপণ, সুদহারের সীমা, ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির চাপ, মুদ্রানীতি প্রণয়ন পদ্ধতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও সুশাসন শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়ালি ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) কারিগরি সহায়তার অগ্রগতি, আর্থিক খাতের বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনা এবং ব্যালেন্স অব পেমেন্ট হিসাবায়নের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়।সুদহারের বিষয়ে আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, সামগ্রিকভাবে আমানতের সুদহারে কোনো সীমা নেই। এটি মূল্যস্ম্ফীতির সঙ্গে সমন্বয়ের নির্দেশনা রয়েছে। আর ঋণের সুদহারের সীমা একেবারে তুলে দিলে ব্যাংকের আয় বাড়লেও ব্যবসা-বাণিজ্যে খরচ বাড়বে। ব্যবসার খরচ বাড়লে মূল্যস্ম্ফীতি আরও বাড়তে পারে। তেলের দর বৃদ্ধির পর এমনিতেই মূল্যস্ম্ফীতি বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, বর্তমানে বিনিময়হারের বিষয়টি ব্যাংকগুলোর ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ডলার কেনায় অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লাগাম টানতে ব্যাংকগুলো নিজেরাই রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ডলার কেনার একটি দর ঠিক করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন আন্তঃব্যাংক ডলার বেচাকেনার প্রকৃত দর প্রকাশ করছে। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করত, সেটিই আন্তঃব্যাংক দর হিসেবে প্রকাশ করা হতো।বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, মূল্যস্ম্ফীতি প্রত্যাশা জরিপে আগামীতে আরও বাড়ার ধারণা মিলছে। তবে এটি ১০ শতাংশের নিচেই থাকবে। বিশেষ করে আমন ধান উঠলে মূল্যস্ম্ফীতি কমতে পারে। এ ছাড়া আমদানি কমানোর মাধ্যমে মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বিনিময় হার ঠিক রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বছরে অন্তত দু বার মুদ্রানীতি ঘোষণার বিষয়ে সংস্থাটির সুপারিশ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বর্তমানে জিডিপির হিসাব একবার প্রকাশ করা হয়। আগামীতে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রকাশের একটি উদ্যোগ চলমান আছে, যা কার্যকর হলে মুদ্রানীতি দু বার প্রকাশ করা হবে।