উল্কা গেমসের কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরবাজেটের আকার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবে
No icon

বাজেটে তামাক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির তাগিদ

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে যুগোপযোগী ও কার্যকর করারোপের মাধ্যমে তামাক পণ্যে মূল্যবৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো। এ জন্য জর্দা ও গুলের মতো ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যের ট্যারিফ ভ্যালু প্রথা বিলুপ্তকরণ, সিগারেটের মূল্যস্তর ৪টি থেকে কমিয়ে ২টিতে নিয়ে আসা এবং স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ২ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনগুলো। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো এ দাবি জানায়। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্রে (সিটিএফকে) সহায়তায় প্রজ্ঞা ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (আত্মা) উদ্যোগে তামাকবিরোধী সংগঠন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, এসিডি, ইপসা, বিটা, সুপ্র এবং তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) সম্মিলিতভাবে কেমন তামাক কর চাই শীর্ষক প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় তামাকবিরোধী প্ল্যাটফর্মের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্স ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ প্রধান আলোচক ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, কয়েক বছর ধরে তামাক পণ্যের করকাঠামো পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছি। এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে একমত পোষণ করলেও বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যায় না। তামাকের ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষায় বাজেটে কার্যকরভাবে করারোপের মাধ্যমে দাম বৃদ্ধির দাবি জানান তিনি।

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, তামাক পণ্যের দাম কার্যকরভাবে বাড়ানো হলে, যারা নতুন করে তামাক সেবন শুরু করতে চায় তারা নিরুৎসাহিত হবে। তামাক ব্যবহারকারীদের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটানোর জন্য কাজ করতে হবে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রমে তামাক ব্যবহারকারীদের অন্তর্ভুক্ত না করার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে তামাক ব্যবহারের ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাকপণ্যে করারোপের ক্ষেত্রে এনবিআরকে রাজস্ব আহরণের চেয়ে জনস্বাস্থ্যকে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে তামাক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন, অথচ মোট তামাক রাজস্বের মাত্র দশমিক ২ শতাংশ আসে ধোঁয়াবিহীন তামাক থেকে। তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে ৩২ লাখ ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে। সিগারেটের ব্যবহার ১৪ শতাংশ ও বিড়ির ব্যবহার ৫ শতাংশ হ্রাস পাবে। দীর্ঘমেয়াদে ১০ লাখ বর্তমান ধূমপায়ীর অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে এবং ৬ হাজার ৬৮০ কোটি থেকে ১১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকার মধ্যে (জিডিপির ০.৪ শতাংশ পর্যন্ত) অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে।