বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমা দিতে গিয়ে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়—ভুল হতেই পারে। বেশির ভাগ ভুলই হয় করের হিসাব ও কর রেয়াত নির্ধারণে। তার ওপর অনেক করদাতা আয়কর প্রসঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগে থাকেন। তবে কোনো ভুল হলে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। রিটার্ন জমা দেওয়ার পরও তা সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। এবার দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে এই ভুল সংশোধন করা যায়।
তিন ধরনের ভুল সংশোধন করা যাবে
রিটার্নে তিন ধরনের ভুল সংশোধনের সুযোগ আছে। রিটার্ন দাখিলের পর করদাতা যদি বুঝতে পারেন যে, তার প্রদেয় কর সঠিকভাবে নির্ণয় হয়নি বা সঠিক অঙ্কে পরিশোধ হয়নি, তবে তিনি সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। যে ভুলগুলো সংশোধনের আওতায় পড়ে, সেগুলো হলো—
১. প্রদর্শিত আয়ে ভুল
২. দাবি করা কর অব্যাহতি বা কর ক্রেডিটে ভুল
৩. অন্য যেকোনো যৌক্তিক ভুল
যে ভুলগুলো সংশোধন করা যাবে না
১. রিটার্ন দাখিলের তারিখ থেকে ১৮০ দিন অতিক্রান্ত হলে
২. সংশোধিত রিটার্ন একবার দাখিল করার পর
৩. মূল রিটার্ন নিরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হলে
অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) করদাতাদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু করেছে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ‘সংশোধন’ অপশন ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধন করা যাবে। সংশোধিত রিটার্নে করের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে, নিয়ম অনুযায়ী বাড়তি করের সঙ্গে প্রযোজ্য জরিমানাও পরিশোধ করতে হবে। অনলাইনে মূল রিটার্ন দাখিলের পর কোনো ভুল ধরা পড়লে অনলাইন প্ল্যাটফর্মেই সংশোধিত রিটার্ন দেওয়ার সুযোগ খোলা থাকে। সংশোধন অপশন ব্যবহার করলে অবশ্যই সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এছাড়া আয়কর দিবসের পরে বছরজুড়েই অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার সুবিধা রয়েছে।
সরাসরি রিটার্ন দাখিল
আইন অনুযায়ী কর কার্যালয়ে গিয়েও ভুল সংশোধনী রিটার্ন দাখিল করা যায়। সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন জমা দেওয়ার পর যদি দেখা যায় অনিচ্ছাকৃতভাবে কম আয় দেখানো হয়েছে, কম কর পরিশোধ করা হয়েছে, কিংবা বেশি কর রেয়াত বা কর অব্যাহতি দেখিয়ে কর কম পরিশোধ হয়েছে—অথবা হিসাবের ভুল হয়েছে—তাহলে সংশোধনী রিটার্ন সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে জমা দিতে হয়।
করদাতা সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করলে উপকর কমিশনার সব শর্ত পর্যালোচনা করে সন্তুষ্ট হলে রিটার্নটি গ্রহণ করেন এবং প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ প্রদান করেন।

