জুলাই শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বরাদ্দ ৪০৫ কোটি টাকাউদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে বেড়েছে বরাদ্দকালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহতনতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর ১ হাজার টাকাআজ জাতীয় বাজেট পেশ
No icon

নিয়ন্ত্রণহীণ মূল্যস্ফীতি ভোক্তার কাঁধে

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল বা বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে মন্দায় আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে ডলারের দাম ও ঋণের সুদ অপরিকল্পিত এবং লাগামহীনভাবে বাড়ছে। উদ্যোক্তাদের খরচ বাড়ছে। কমছে টাকার মান। এতে আমদানি ব্যয় ও পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণহীণ হয়ে পড়েছে মূল্যস্ফীতির হার। অর্থনৈতিক অস্থিরতায় বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে মানুষের আয় বাড়ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল সিদ্ধান্তের সব দায় গিয়ে পড়ছে ভোক্তা ও উদ্যোক্তার ওপর। চড়া মূল্যস্ফীতির দণ্ডে দণ্ডিত হচ্ছে ভোক্তা। ভোক্তাকে মূল্যস্ফীতির আঘাত থেকে রক্ষা করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব হলেও সংস্থাটি গত প্রায় দুই বছর ধরে সফল হচ্ছে না। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকই করোনার সময় ‘লকডাউনের অর্থনীতি’ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলার নজির আছে। সেই সময়ে নানামুখী প্রণোদনা দিয়ে ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ছাপানো টাকা বাজারে ছেড়ে ভোক্তাকে কিছুটা হলেও উপশম দিতে সক্ষম হয়েছে। অথচ গত দুই বছর ধরে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েও সংস্থাটির শীর্ষ নির্বাহীরা ডলারের দাম ও মূল্যস্ফীতিকে বাগে আনতে পারছে না।

৫ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রফউ তালুকদার একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও দুটি প্রধান দায়িত্ব আছে। একটি হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং অপরটি হচ্ছে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গৃহীত মুদ্রানীতির লক্ষ্য থাকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক স্থিতিশীলতা।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রিজার্ভ ক্ষয়-এ দুটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। এক্ষেত্রে শুধু চাহিদা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি না, বরং সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্যেও কাজ করছি।’

অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছে না। এর দায় এসে পড়ছে সরকার, উদ্যোক্তার ওপর। সরকার ব্যয় নির্বাহ করতে মানুষের ওপর করের বোঝা বাড়াচ্ছে। উদ্যোক্তা খরচ মেটাতে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে ভোক্তাকেই এ দায় বহন করতে হচ্ছে। তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে, মূল্যস্ফীতির হার কমাতে ও বিনিয়োগ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগই কার্যকর ফল বয়ে আনতে পারেনি। এ লক্ষ্য অর্জনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তগুলো নিয়েও মতভেদ আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীরা সরাসরি বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। যে কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।