
সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কার্যক্রম স্থবির করে দেওয়া এবং রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে কাস্টম কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই সঙ্গে তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) হিসেবে বদলি করা হয়েছে।মঙ্গলবার রাতে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। একই প্রজ্ঞাপনে জাকির হোসেনকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি ও রপ্তানি হওয়া পণ্য শুল্কায়ন করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। প্রতি কর্ম দিবসে গড়ে ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। গত শনি ও রোববার টানা শাটডাউন কর্মসূচির কারণে এই রাজস্ব আহরণ করতে পারিনি এনবিআর। আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সোমবার কাস্টম হাউজে যোগদান করলেও সেদিন ছিল ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ কর্মদিবস। তাই দুই দিনের ক্ষতি আর পোষাতে পারেনি কাস্টম কর্তৃপক্ষ।অবশ্য সদ্য সমাপ্ত অর্থ বছরে ৭৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে কাস্টম হাউজ। আগের অর্থবছরে এ অঙ্ক ছিল ৬৮ হাজার ৭৫৫ দশমিক ৭ কোটি টাকা। এই হিসেবে এক অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৬ হাজার ৬৭৬ দশমিক ৩ কোটি টাকা। শতাংশের হিসেবে যা ৯ দশমিক ৭১। তবে টার্গেটের তুলনায় আবার কম ছিল এই রাজস্ব। এবারে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০ হাজার ৪০২ কোটি টাকা।
গত ২১ ও ২৮ জুন সরকার ঘোষিত বিশেষ নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কমিশনার মো. জাকির হোসেন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। বিশেষ করে ২৮ জুনের সাপ্তাহিক ছুটি পূর্বঘোষিতভাবে বাতিল করা হলেও তিনি দায়িত্ব পালন না করে কাস্টম হাউজ বন্ধ রাখেন। এর ফলে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটে এবং সরকারের রাজস্ব আদায় কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে এনবিআর জানিয়েছে। এ ঘটনাকে শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা) বিধিমালার ৩৯ (১) ধারা অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি হওয়া পণ্য শুল্কায়ন করে চট্টগ্রাম কাস্টম কর্তৃপক্ষ। তাদের ছাড়পত্র ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কোন পণ্য খালাস করা যায় না। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার পণ্যভর্তি কন্টেইনার খালাস করে ব্যবসায়ীরা। শাটডাউন কর্মসূচীর কারণে এই কার্যক্রমও প্রায় বন্ধ ছিল বন্দরে। এজন্য বন্দরে বেড়ে যায় পণ্যভর্তি কনটেইনারে সংখ্যা। ১৫ হাজার রপ্তানি কনটেইনারেরও জট তৈরি হয় ১৯টি বেসরকারি ডিপোতে।