ইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসের
No icon

শুল্ক কমানোর পরও দাম বেড়েছে খাতুনগঞ্জে

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের শুল্কহার কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। কিন্তু শুল্ক কমার পরও এসব পণ্যের দাম না কমে উল্টো বেড়েছে দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে।এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ড এবং বহির্নোঙরে অবস্থিত ১৯ জাহাজে ৪ লাখ ৭ হাজার ৬৮১ টন খাদ্যশস্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব পণ্যের অধিকাংশই রমজানের পণ্য। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, খেজুর, মটর ও গম। এর মধ্যে জাহাজ থেকে নামানো হয়েছে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৯ টন। ১২ জাহাজে ছোলা, তেল ও চিনি রয়েছে ২ লাখ ৩১ হাজার ৪১৫ টন। কন্টেইনারভর্তি হয়ে আছে ২২ হাজার ৫৫০ টন।শুল্কহার প্রত্যাহারের সুফল ভোক্তারা ভোগ করতে পারবে না। ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাত দেখিয়ে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। রমজানে বাজার তদারকি শুরু হলে তখন কিছুটা দাম কমতে পারে; কিন্তু তখন খুচরা পর্যায়ে পণ্য চলে যাবে। ভোক্তারা হয়তো ক্রয় করে ফেলবেন।

গত শনিবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর ৭২ হাজার ৭৩৩ টন ভোজ্যতেল, ৫৯ হাজার ৫২০ টন সয়াবিন তেল, ২ লাখ ২৭ হাজার ২০৩ টন গম, ৩ হাজার ৮১৩ টন মটর রয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিনি ২০০ টন, জানুয়ারিতে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩২৫ টন এবং গত বছরের ডিসেম্বরে ১ লাখ ৫২ হাজার ৯৪৯ টন জাহাজ থেকে খালাস হয়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কোনো চাল আমদানি হয়নি।কন্টেইনার ভর্তি পণ্যের মধ্যে রয়েছে- পেঁয়াজ, খেজুর, হলুদ, আদা, পরিশোধিত তেল, মটর, শুকনো খেজুর ও রেফার (শীতাতপ)। হলুদ ৪ হাজার ৫২৫, আদা ২ হাজার ৩৫০, পরিশোধিত চিনি ২৭১, মটর ৬ হাজার ৪৫১, শুকনো খেজুর ৮ হাজার ৯২৮ এবং রেফার কন্টেইনারে এসেছে ২৫ টন।বহির্নোঙরে আউটারে ১৯ জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করছে ১৯টি জাহাজ। এসব জাহাজে ছোলা, ভোজ্যতেল, চিনি ও গম রয়েছে। একটি জাহাজে ১৫ হাজার ১৩০ টন ছোলা, সাতটি জাহাজে ৬০ হাজার ৪৮৮ টন ভোজ্যতেল ও একটিতে ২০ হাজার ৮৩৪ টন সয়াবিন, তিনটি জাহাজে এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৬৩ ও সাতটি জাহাজে এক লাখ ৭৬ হাজার ২৬৬ টন গম রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, রমজানের পণ্য নিয়ে আসা জাহাজের সংখ্যা বেড়েছে। জাহাজ থেকে দ্রুত পণ্য খালাসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।শুল্কহার কমলেও দাম বেড়েছে ছোলা-চিনি-তেলের শুল্কহার কমিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। রোজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুরে ভ্যাট ও শুল্ক কমানো হয়। এর মধ্যে খেজুরে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ, চালে রেগুলেটরি ডিউটি ২০ শতাংশ, তেলে মূসক ৫ শতাংশ এবং চিনিতে শুল্ক প্রত্যাহার। তবে এর প্রভাব পড়েনি বাজারে। দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে ছোলা, তেল ও চিনির দাম বেড়েছে।খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি সোলাইমান বাদশা জানান, শুল্কহার প্রত্যাহার করলেও তেল, চিনি ও ছোলাসহ ডাল জাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতি মণ সয়াবিন তেলের দাম ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চিনির ৫০ থেকে ৭০ এবং ছোলার দাম বেড়েছে ২০০ থেকে আড়াইশ টাকা। বাজার তদারকি বাড়ানো এবং অন্তত এক মাস আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শুরু না করলে ভোক্তারা সুফল পাবে না বলে মনে করেন তিনি।কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম- অন্তত দুই মাস আগে শুল্কহার না কমালে ভোক্তা পর্যায়ে সুফল মিলবে না। শুল্ক কমানোর পর ব্যবসায়ীরা বলছে আগের বেশি দামে কেনা পণ্য বিক্রি করছে; শুল্ক কমানো পণ্য এখনো আসেনি। অথচ আমরা দেখছি আগে পণ্য ক্রয় করলেও বন্দর থেকে খালাস করেনি; শুল্ক কমানোর পর খালাসের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আসলে ব্যবসায়ীদের কাজই হলো অজুহাত দেখিয়ে জনগণের পকেট কাটা।