ইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসের
No icon

অগ্রিম করে আটকা মুনাফার দ্বিগুণ টাকা

দেশের বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানিতে কৌটা সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি। রাজধানীর অদূরেই প্রতিষ্ঠানটির কারখানা। সাত বছরে প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ২ কোটি টাকার বেশি অগ্রিম কর দিয়েছে। এই টাকা ফেরত পাওয়ার কথা। এনবিআর কাগজে-কলমে তা অনুমোদনও দিয়ে ফেলেছে। কিন্তু সেই টাকা ফেরত পাননি প্রতিষ্ঠানটির মালিক। অথচ ওই কোম্পানির লাভের দ্বিগুণ টাকা এনবিআরে আটকে আছে।এনবিআরের হিসাবে ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ওই কোম্পানির ২ কোটি ১০ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা জমা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের মালিক সংশ্লিষ্ট কর কার্যালয়ে আবেদন করেও টাকা পাননি। উৎসে বা অগ্রিম করের টাকা আটকে থাকায় শুধু ওই প্রতিষ্ঠান নয়; এমন শত শত কোম্পানির কাছে তা গলার কাঁটা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, উৎসে করের টাকা ফেরত না পাওয়ায় ব্যবসায়ীদের মুনাফার টাকা আটকে যাচ্ছে। এনবিআরে মাসের পর মাস রিফান্ডের টাকা আটকে থাকে। এতে ভোগান্তি বাড়ে উদ্যোক্তাদের। এই উৎসে কর উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ফেরতযোগ্য উৎসে করের টাকা চাইলে কর কর্মকর্তাদের ভাবসাব এমন থাকে যেন, তাঁরা সরকারের টাকা দিচ্ছেন। আমি মনে করি, উৎসে করের টাকা যদি ফেরত দেওয়ার বিধান থাকে, তাহলে এই টাকা নেন কেন? উৎসে কর উঠিয়ে দেওয়া উচিত। ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এনবিআরসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এ নিয়ে বৈঠকও হয়েছে বলে তিনি জানান।এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আয়করের প্রায় ৬০ শতাংশের মতো আসে উৎসে কর থেকে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই খাত থেকে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা এসেছে। ওই বছর রিফান্ড দেওয়া হয়েছে মাত্র ২৩৬ কোটি টাকা। এনবিআরের একজন কর্মকর্তা জানান, নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় রিফান্ডের টাকা আটকে যায়।

করপোরেট করেও ভুগতে হবে

এবার করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করপোরেট করহার ২০ শতাংশ। আর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয়, এমন প্রতিষ্ঠানের জন্য করপোরেট করহার সাড়ে ২৭ শতাংশ। কিন্তু শর্ত হলো বছরে ১২ লাখ টাকার বেশি খরচ ব্যাংকের মাধ্যমে করতে হবে। এর মানে প্রতি মাসে গড়ে ১ লাখ টাকার বেশি নগদে খরচ করা যাবে না।

এখানেও সমস্যা আছে। যেমন বহু কোম্পানি তাদের কর্মী ও শ্রমিকদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে। এসব খাবার নিজেদের ক্যানটিনে রান্না করা হয়। প্রতিদিন বাজারও করা হয়। ফলে প্রতিদিনই কয়েক লাখ টাকার বাজার করতে হয়। করপোরেট করের সুবিধা পেতে হলে বাজার থেকে চাল, ডাল, তেল, মাছ-মাংস, সবজি ইত্যাদি নগদ টাকায় কেনা যাবে না।