কর ফাঁকিবাজদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।তিনি বলেন, যারা আয়কর রিটার্ন জমা দেন না কিংবা নানাভাবে কর ফাঁকি দেন বা করা অব্যাহতি নেন, তাদের কাছ থেকে কর আদায়ের জন্য এখন কর কর্মকর্তাদের লক্ষ্যমাত্রা (টার্গেট) দেওয়া হবে।রোববার (৪ মে) সকালে রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে আসন্ন বাজেটে রাজস্ব খাত ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেনতিনি।বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বা এফআইসিসিআই, সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদদের সংগঠন দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) ও জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (জেবিসিসিআই) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট প্রতিষ্ঠান স্নেহাশীষ মাহমুদ অ্যান্ড কোম্পানির অংশীদার স্নেহাশীষ বড়ুয়া।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনারেটে নির্দেশনা দেওয়া হবে, টার্গেট দেওয়া হবে, এবছর ও পরবর্তী বছরের জন্য। এতে তারা নন-ফাইলার্সদের (যারা রিটার্ন জমা দেন না) থেকে কী পরিমাণ কর সংগ্রহ করতে পারলো, রিবেটার্সদের (ছাড় পাওয়া) থেকে কত কর সংগ্রহ করতে পারলো তা বোঝা যাবে।তিনি বলেন, এনবিআরের ৯২ শতাংশ রাজস্ব টিডিএসসহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসে। কর কর্মকর্তারা মাত্র ৮ শতাংশ রাজস্ব সরাসরি সংগ্রহ করেন। এই ব্যবস্থায় এখন থেকে কর কর্মকর্তাদের দক্ষতারও প্রমাণ পাওয়া যাবে।শুরু থেকে বিপুল পরিমাণে করছাড় দেওয়া হচ্ছে। যে পরিমাণ রাজস্ব সংগ্রহ করা হয়, সমপরিমাণ অর্থ করছাড়ের কারণে হারাতে হচ্ছে। কিন্তু সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ ঋণের বড় চাপ/বোঝা (বার্ডেন) আছে। এ অবস্থায় এভাবে কর অব্যাহতি দিয়ে টিকে থাকা সম্ভব নয়, যোগ করেন তিনি।তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথ নিয়ম মেনে এসব ছাড় দেওয়া হয়নি। নতুন করছাড় নীতিতে এই সক্ষমতা সংসদের হাতে থাকবে।স্বাগত বক্তব্যে ফরেন চেম্বারের সভাপতি জাবেদ আখতার বলেন, ব্যবসার জন্য কঠিন পরিবেশ তৈরি করে রাখা হয়েছে। প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ কীভাবে বাড়ানো যায়, সেদিকে নজর দেওয়া দরকার। একক ভ্যাট কাঠামো প্রয়োজন। কাস্টমসের দায়িত্ব কর সংগ্রহ করা নয়, তাদের কাজ ব্যবসায় সহায়তা করা। ব্যবসা বাড়লে রাজস্ব আদায় এমনিতেই বাড়বে।মূল প্রবন্ধে কর ও ভ্যাট বাড়ানোর জন্য সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে সম্পৃক্ত করার বিষয়টি তুলে ধরে স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, করের টাকা কোথায় ব্যবহার হচ্ছে, সে বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা থাকা দরকার।