ইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসের
No icon

আইএমএফ থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ চায় বাংলাদেশ

এক দশক পর এই প্রথম আইএমএফের কাছে ঋণ চাইবে বাংলাদেশ। ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চায় সরকার। প্রতিবছর ১৫০ কোটি ডলার করে তিন বছরে এই ঋণ চাওয়া হবে। আইএমএফের আর্টিকেল ফোর মিশনের একটি দল গতকাল ঢাকায় এসেছে।
অর্থনীতির চলমান পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নিতে চায় বাংলাদেশ। প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ধরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় এই ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। প্রতিবছর ১৫০ কোটি ডলার করে ৩ বছরে এই ঋণ চাইবে সরকার।

ঋণ প্রদানে সংস্থাটিরও আগ্রহ আছে। তবে তারা ঋণ দেবে বাজেট সহায়তা হিসেবে এবং তা হবে দরকষাকষি ও শর্ত সাপেক্ষ। এরই অংশ হিসেবে গত মাসে বাংলাদেশে আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দের সঙ্গে তৎকালীন অর্থসচিব (বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর) আব্দুর রউফ তালুকদারের ভার্চুয়াল আলোচনা হয়েছে। এবারে সরাসরি আলোচনা হতে যাচ্ছে।

আইএমএফের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে একটি দল ৯ দিনের সফরে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছে। এটি মূলত আইএমএফের আর্টিকেল ফোর মিশনের দল। দলটি বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, ইআরডি ইত্যাদি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে। এসব বৈঠকের ফাঁকে ঋণের আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঋণের শর্তের ব্যাপারে বৈঠক করতে এরপর আরেকটি দল আসবে। সেই দলের নেতৃত্ব দেবেন আইএমএফের ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান ও শ্রীলঙ্কার নির্বাহী পরিচালক সুরজিৎ বালা। দর কষাকষি চূড়ান্ত হলে ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থাপন করা হবে।

বাংলাদেশ এর আগে আইএমএফ থেকে চারবার ঋণ নেয়। প্রথমবার ঋণ নেওয়া হয় ১৯৯০-৯১ সময়ে। এর পর ২০০৩-২০০৪, ২০১১-১২ এবং সর্বশেষ ২০২০-২১ সালে সংস্থাটি থেকে ঋণ নেয় বাংলাদেশ। তবে কোনোবারই ঋণের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলার ছাড়ায়নি।

সদস্য হিসেবে আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ বছরে ১০০ থেকে ১৫০ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ পাওয়ার যোগ্য। ফলে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ), বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলার জন্য গঠিত সহনশীলতা ও টেকসই তহবিল (আরএসএফ)-আইএমএফের এই তিন কর্মসূচি থেকে আলাদা করে ঋণ চাওয়া হবে। ইসিএফ থেকে নেওয়া ঋণে সুদ ও মাশুল দিতে হয় না। ১০ বছর মেয়াদি এ ঋণ পরিশোধে সাড়ে ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডও রয়েছে। বাকি দুটি তহবিল থেকে দেওয়া ঋণের সুদহার ১ দশমিক ৫৪ থেকে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

সরকার চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের ভর্তুকি বাবদ ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা রেখেছে। এত বেশি ভর্তুকির যৌক্তিকতা আছে কি না, তা বিবেচনা করতে পারে আইএমএফ। পাশাপাশি সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ও সুশাসনের ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।